বিলাসী গল্পের সৃজনশীল ৬০টি প্রশ্ন উত্তর mcq - পরীক্ষায় ১০০% সহায়ক বিশ্লেষণ!
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম মূল্যবান গল্প বিলাসী, যার রচয়িতা সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত। এই গল্পে সামাজিক বাস্তবতা, আত্মত্যাগ, সংসারের গূঢ় জটিলতা এবং নারীর জীবনের দুঃখ তুলে ধরা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা এই গল্পের মধ্য দিয়ে যেমন নৈতিকতা শিখতে পারে, তেমনি সাহিত্যিক বিশ্লেষণেও পারদর্শী হয়ে উঠতে পারে।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা তুলে ধরব বিলাসী গল্পের ৬০টি সৃজনশীল প্রশ্ন ও সহজ, শিক্ষনীয় ব্যাখ্যা যুক্ত উত্তর, যা দশম শ্রেণি থেকে শুরু করে যে কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বিলাসী গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
নিচে বিলাসী গল্প থেকে ৬০টি প্রশ্ন ও উত্তর ধাপে ধাপে দেওয়া হল। উত্তর গুলো এমন ভাবে সাজানো হয়েছে, যেন কোনো শিক্ষার্থী একটিবার পড়লেই সহজে বুঝে নিতে পারে।
1. বিলাসী কে ছিলেন?
উ:) বিলাসী ছিলেন এক গরিব গৃহবধূ, যিনি সংসারে অবহেলা ও দারিদ্র্যের মধ্যে থেকেও সন্তানদের নিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করেছিলেন।
2. তার পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে যা জানা যায়?
উ:) স্বামী, সন্তান এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ছিল তার পরিবার; তবে কেউ তাকে ভালোবাসতো না, বরং অবহেলা করত।
3. গল্পের শুরুতে বিলাসীর অবস্থা কেমন ছিল?
উ:) গল্পের শুরুতেই দেখা যায় বিলাসী নিখোঁজ; পরে জানা যায়, সে অভিমানে ঘর ছেড়েছে।
4. তার সংসারজীবন কেমন ছিল?
উ:) সংসারজীবন ছিল কষ্টকর ও ভালোবাসাহীন। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ি তাকে অবহেলা করত।
5. গল্পে বিলাসীর স্বামী কেমন চরিত্রের?
উ:) স্বামী ছিল কঠোর, অমনোযোগী এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন।
6. তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা কেমন আচরণ করত?
উ:) তারা বিলাসীর সঙ্গে উপেক্ষার আচরণ করত এবং তাকে বোঝা মনে করত।
7. বিলাসী তার কন্যাকে নিয়ে কী ভাবতেন?
উ:) কন্যাই ছিল তার জীবনের একমাত্র আনন্দ ও আশ্রয়। তাকে নিয়েই সে বাঁচার স্বপ্ন দেখত।
8. কন্যার প্রতি তার ভালোবাসার প্রকাশ কোথায় দেখা যায়?
উ:) সে কন্যাকে নিজের খাবার দিয়ে দিত, যত্ন নিত এবং কোনো অভাব টের পেতে দিত না।
9. গল্পে বিলাসীর আত্মত্যাগ কীভাবে চিত্রিত?
উ:) নিজে না খেয়ে সন্তানকে খাওয়ানো, নিজের স্বপ্ন বিসর্জন দেওয়া ও আত্মবিলুপ্তি তার আত্মত্যাগ প্রকাশ করে।
10. সে কেন তার নিজের চাওয়া কখনো বলেনি?
উ:) কারণ সে জানতো, কেউ শুনবে না। নিজের চাওয়া বললে তা নিয়ে উপহাস হবে।
11. গল্পে মা-মেয়ের সম্পর্ক কেমন?
উ:) গভীর, মমতাময় এবং আত্মিক। এটি ছিল নিঃস্বার্থ ভালোবাসার প্রতীক।
12. তার মৃত্যুর কারণ কী ছিল?
উ:) অবহেলা, দারিদ্র্য, একাকীত্ব ও অভিমান তাকে আত্মহননের দিকে ঠেলে দেয়।
13. কন্যা কেন তাকে খুঁজতে শুরু করেছিল?
উ:) মা হঠাৎ হারিয়ে যাওয়ায় সে কষ্ট পেয়েছিল এবং ভালোবাসা থেকে তাকে খুঁজেছিল।
14. বিলাসীকে নিয়ে সমাজের প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
উ:) সমাজের কেউ তার খোঁজ রাখেনি; মৃত্যুর পর হঠাৎ করেই সবাই বিচলিত হয়।
15. তার চরিত্রে কোন মানবিক গুণ গুলো পাওয়া যায়?
উ:) সহানুভূতি, আত্মত্যাগ, দায়িত্ববোধ, ধৈর্য ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।
16. বিলাসী কেন গল্পের প্রধান চরিত্র?
উ:) কারণ এই চরিত্রের মধ্য দিয়েই লেখক সমাজের বাস্তবতা ও নারীর নিঃস্বার্থতা তুলে ধরেছেন।
17. তার চরিত্র কতটা বাস্তব?
উ:) একেবারে বাস্তব; সমাজে বহু নারী আজও এমন কষ্টের মধ্যে বাঁচে।
18. লেখক তার কষ্ট কীভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন?
উ:) সংলাপহীনভাবে, বর্ণনার মধ্য দিয়ে, মায়ের নিঃশব্দ কান্নায়।
19. তার আচরণে কোন শিক্ষা পাওয়া যায়?
উ:) ভালোবাসা না পেলে মায়া-মমতা বিলীন হয়ে যায়; সমাজে সম্মান জরুরি।
20. গল্পটি কেন পাঠকের মনে দাগ কাটে?
উ:) কারণ এটি বাস্তব, আবেগপূর্ণ ও সমাজের এক নিষ্ঠুর রূপকে তুলে ধরে।
21. গল্পটি কোন কালপর্বে লেখা?
উ:) বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে, যখন নারীর অবস্থা ছিল করুণ।
22. গল্পের ঘটনা কোন শ্রেণির মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে?
উ:) নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের, যেখানে অভাব আর অবহেলা নিত্যসঙ্গী।
23. লেখকের কাহিনির নির্মাণ কেমন?
উ:) খুব সাবলীল, আবেগময় এবং বাস্তবতানির্ভর।
24. গল্পে নায়ক কে?
উ:) বিলাসীই এই গল্পের নায়িকা; তার আত্মত্যাগ ও ভালোবাসা গল্পের মূল।
25. গল্পের মূল বিষয়বস্তু কী?
উ:) নারীর আত্মত্যাগ, সমাজের অবহেলা ও এক মায়ের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।
26. কন্যার চরিত্রে কী পরিবর্তন আসে?
উ:) কন্যা বুঝতে শেখে মায়ের ভালোবাসা, অনুভব করে মায়ের অভাব।
27. লেখক কেন এই গল্প লিখেছেন বলে মনে হয়?
উ:) সমাজের অবহেলিত নারীদের কষ্ট মানুষের সামনে আনার জন্য।
28. গল্পের শেষে পাঠকের মনে কী প্রভাব পড়ে?
উ:) মর্মস্পর্শী, দুঃখে ভরা এবং চিন্তার খোরাক জোগায়।
29. এই গল্পের নাম ‘বিলাসী’ রাখা কতটা যুক্তিযুক্ত?
উ:) এটি একটি প্রতীকী নাম, যে জীবনে কোনো বিলাস ছিল না।
30. বিলাসী কি সমাজের প্রতিচ্ছবি?
উ:) হ্যাঁ, সে সেইসব নারীর প্রতিচ্ছবি, যারা ভালোবাসার অভাবে নিঃশেষ হয়ে যায়।
31. লেখকের ভাষা কেমন?
উ:) লেখকের ভাষা সহজ, স্পষ্ট, আবেগপূর্ণ এবং পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
32. অলংকারের ব্যবহার কোথায় দেখা যায়?
উ:) বিলাসীর দুঃখ বর্ণনায় রূপক ও উপমার অলংকার ব্যবহৃত হয়েছে যেমন– “বুকের ভিতর কান্না চেপে রাখা পাথরের মতো ভারী।”
33. গল্পে সংলাপ কেমন?
উ:) সংলাপ খুবই কম, তবে যেখানে আছে তা বাস্তবসম্মত ও আবেগ প্রবণ।
34. কাব্যিক ভাষার প্রভাব কোথায় লক্ষণীয়?
উ:) মায়ের মনের কথা, মেয়ে হারিয়ে যাওয়ার বর্ণনা, এবং মৃত্যুর আগে বিলাসীর অনুভব – এসব জায়গায় কাব্যিক আবহ রয়েছে।
35. সংক্ষিপ্ত বাক্যে লেখক কী অর্জন করেছেন?
উ:) তীব্র আবেগ প্রকাশ, ভাবপ্রবণতা এবং গভীর প্রভাব সৃষ্টিতে এই রচনাশৈলী সফল।
36. গল্পের ভঙ্গিমা কেমন?
উ:) এককেন্দ্রিক, আবেগনির্ভর এবং বাস্তবতা-নির্ভর কাহিনি ধারায় রচিত।
37. উপমা কোথায় ব্যবহৃত হয়েছে?
উ:) যেমন: “বিলাসীর মুখ যেন শুকনো পাতার মতো বিবর্ণ।” এখানে তার কষ্ট বোঝাতে উপমা দেওয়া হয়েছে।
38. উপসংহারে লেখক কোন চিত্র ফুটিয়েছেন?
উ:) সমাজের ব্যর্থতা, নারীর দুঃখ এবং একটি ভালোবাসাহীন মৃত্যুর ছবি।
39. চিত্রনাট্য কেমন?
উ:) মসৃণ, বাস্তবসম্মত এবং একটি আবেগঘন চূড়ান্ত পরিণতির দিকে ধাবিত।
40. কাহিনির গতি কেমন?
উ:) ধীর গতির, কিন্তু প্রতিটি পর্বে আবেগের সঞ্চার ঘটায়।
41. লেখক কোন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লিখেছেন?
উ:) তৃতীয় পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, কিন্তু আবেগে পাঠক একেবারে ভিতরে ঢুকে যায়।
42. চরম আবেগ কিভাবে ফুটে উঠেছে?
উ:) মেয়ের কান্না, মায়ের নিঃশব্দ চোখের ভাষা ও হারিয়ে যাওয়া মনোবেদনায়।
43. সংক্ষিপ্ত গল্প হয়েও কীভাবে এত গভীর?
উ:) চরিত্রচিত্রণ, বাস্তবতা ও ভাষার আবেগময় ব্যবহারে।
44. চরিত্রচিত্রণ কতটা জীবন্ত?
উ:) এতটাই বাস্তব ও জীবন্ত যে পাঠকের মনে স্থায়ী ছাপ ফেলে।
45. সময় ও স্থান ব্যবহারে লেখক কতটা সফল?উ:) খুবই সফল; গ্রামীণ ও দরিদ্র পরিবেশকে বাস্তবভাবে তুলে ধরেছেন।
46. পাঠকের সহানুভূতি লেখক কীভাবে অর্জন করেন?
উ:) বিলাসীর দুঃখ, নীরবতা ও নিরবিচারে কষ্টে সহানুভূতি জাগে।
47. পাঠক গল্পটি পড়ার সময় কোন আবেগে আক্রান্ত হয়?
উ:) কষ্ট, বেদনা, সহানুভূতি ও আত্মদর্শনের মতো আবেগে।
48. গল্পে বিদ্রূপ আছে কি?
উ:) হ্যাঁ, সমাজের উপেক্ষার বিরুদ্ধে একটা নিঃশব্দ বিদ্রূপ আছে।
49. গল্পটি শিক্ষামূলক কীভাবে?
উ:) নারীর প্রতি দায়িত্ব, ভালোবাসার গুরুত্ব এবং মানবিকতা শেখায়।
50. গল্পের শৈলী কী ধরণের সাহিত্যের উপযুক্ত?
উ:) সামাজিক বাস্তবতা নির্ভর মানবিক গদ্যসাহিত্যের উপযুক্ত উদাহরণ।
51. সমাজে এমন ঘটনা কি ঘটতে পারে?
উ:) হ্যাঁ, আজও অনেক নারী পরিবারে অবহেলিত হয়ে হারিয়ে যায় বা আত্মহত্যা করে।
52. লেখক কি সমাজ পরিবর্তনের বার্তা দিতে চেয়েছেন?
উ:) অবশ্যই; সমাজ যেন নারীদের সম্মান দেয় ও ভালোবাসায় বঞ্চিত না করে।
53. নারীর অবস্থান সম্পর্কে লেখকের মত কী?
উ:) নারীরা পরিবারে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করে, অথচ তারাই সবচেয়ে অবহেলিত।
54. গল্পে দারিদ্র্য কীভাবে চিত্রিত?
উ:) খাবার না থাকা, সন্তানকে না খাইয়ে নিজের না খাওয়া, পুরনো কাপড় – সবই দারিদ্র্যের প্রতীক।
55. বিলাসী চরিত্রটি বর্তমান সমাজে কেমনভাবে দেখা যায়?
উ:) এখনো বহু নারী একইভাবে নিঃশব্দে কষ্ট সহ্য করে, তাই সে এক চিরন্তন প্রতিচ্ছবি।
56. লেখক নারীদের প্রতি সহানুভূতিশীল কি না?
উ:) হ্যাঁ, গভীর সহানুভূতির সাথেই তিনি বিলাসীর চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন।
57. এই গল্প থেকে শিক্ষার্থীরা কী শিক্ষা নিতে পারে?
উ:) পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ, নারীর প্রতি সম্মান এবং ভালোবাসার গুরুত্ব।
58. পরিবারে ভালোবাসার অভাব কী পরিণতি আনে?
উ:) মানসিক বিচ্ছিন্নতা, আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত এবং সম্পর্কের ধ্বংস।
59. গল্পটি কি পুরুষতান্ত্রিক সমাজের সমালোচনা?
উ:) হ্যাঁ, যেখানে পুরুষপ্রধান সমাজ নারীর আবেগ ও ত্যাগকে মূল্য দেয় না।
60. বিলাসীর চরিত্র সমাজকে কী বার্তা দেয়?
উ:) ভালোবাসাহীন জীবন মানুষকে নিঃশেষ করে দেয়; তাই মানবিক সম্পর্কই সমাজের ভিত্তি হওয়া উচিত।
উপসংহার:
বিলাসী গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর শুধু একটি শিক্ষামূলক আলোচনা নয়, বরং এটি একটি সমাজ সচেতনতার দিকেও আমাদের নিয়ে যায়। সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের মতো সাহিত্যিকেরা যে কতটা অনুভব দিয়ে গল্প সৃষ্টি করেন, তা এই গল্পে স্পষ্ট। শিক্ষার্থীরা যদি হৃদয় দিয়ে এই গল্পটি পড়ে এবং বিশ্লেষণ করে, তবে সাহিত্যের আসল স্বাদ পাবে।