সেরা ২৫টি নতুন মেহেদি ডিজাইন দেখুন! (২০২৪)
মেহেদি হোক বা হেনা ডিজাইন হোক এটি একটি প্রাচীন শিল্পকলা, যা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া এবং উত্তর আফ্রিকায় এটি প্রচলিত। এর ব্যবহার প্রধানত উৎসব অনুষ্ঠানে হয়ে থাকে, যেমন বিয়ে, ঈদ, দিওয়ালি ইত্যাদি। মেহেদি ডিজাইন শিল্পের একটি অংশ হিসেবে বিবেচিত এবং এটি সময়ের সাথে সাথে নতুন নতুন আঙ্গিকে পরিব্যপ্ত হয়েছে।
নতুন মেহেদি ডিজাইন :
আমরা আজ মেহেদি ডিজাইন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। মেহেদির প্রাকারভেদ, মেহেদি পরার টেকনিক, মেহেদি ডিজাইনের যত্ন নেওয়া ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেছি। তারি মধ্যে আমরা নিচে বেশ কিছু নতুন মেহেদি ডিজাইন গুলোর ছবিও তুলে ধরেছি। আপনারা এই পোস্টের মাধ্যমে অনেক কিছু শিখতে পারবেন বলে আমরা মনে করি।
মেহেদি ডিজাইনের প্রকারভেদ :
মেহেদি ডিজাইনকে প্রধানত চারটি বড়ো ভাগে ভাগ করা যায়। ভারতীয়, আরবিক, আফ্রিকান এবং পশ্চিমা।
১. ভারতীয় ডিজাইন : ভারতীয় মেহেদি ডিজাইন খুবই জটিল। এর মধ্যে ফুল, পাতা, মোরগের মতো বিভিন্ন আকৃতি এবং চিত্র অন্তর্ভুক্ত থাকে। হাতের প্রায় প্রতিটি অংশকে এই ডিজাইন ঢেকে রাখে। বিয়েতে এই ডিজাইন বিশেষ ভাবে ব্যবহৃত হয়, যেখানে কনে এবং বরের নাম ডিজাইনের মধ্যে লুকিয়ে রাখা হয়।
২. আরবিক ডিজাইন : আরবিক ডিজাইন তুলনামূলক ভাবে সহজ এবং বৃহত্তর আকারের হয়। এতে ফুল, পাতা, এবং মোটা রেখা ব্যবহার করা হয়। সাধারণত হাতের বা পায়ের এক পাশে এই ডিজাইন করা হয়, যা দেখতে খুবই আকর্ষণীয় এবং পরিষ্কার লাগে।
৩. আফ্রিকান ডিজাইন : আফ্রিকান ডিজাইন এটি সাধারণত জ্যামিতিক আকার এবং পদ্ধতিগত নমুনায় গঠিত হয়। এটি কালো মেহেদি বা হেনা দিয়ে তৈরি করা হয় এবং এতে ডীপ রং দেওয়া হয়। এই ডিজাইন দেখতে খুবই ব্যতিক্রমী এবং চোখে পড়ার মতো হয়।
৪. পশ্চিমা ডিজাইন : পশ্চিমা মেহেদি ডিজাইন মূলত সাম্প্রতিক সময়ে প্রচলিত হয়েছে। এটি সাধারণত ট্যাটুর অনুকরণে তৈরি করা হয় এবং বিভিন্ন ফ্যাশন শো, পার্টি বা উৎসবে ব্যবহৃত হয়। এই ডিজাইনে সাধারণত ছোট এবং সহজ নমুনা, যা দ্রুত করা যায়।
![]() |
নতুন মেহেদি ডিজাইন |
![]() |
নতুন মেহেদি ডিজাইন |
![]() |
নতুন মেহেদি ডিজাইন |
![]() |
নতুন মেহেদি ডিজাইন |
![]() |
নতুন মেহেদি ডিজাইন |
নতুন মেহেদি ডিজাইনের ধরন :
বর্তমানে মেহেদি ডিজাইনে অনেক নতুন নতুন ধরন এবং টেকনিক দেখা যাচ্ছে। ডিজাইনাররা প্রতিনিয়ত নতুনত্ব আনার চেষ্টা করছেন, যা মেহেদি প্রেমীদের জন্য দারুণ কিছু অভিজ্ঞতা প্রদান করে। নতুন ধরনের মেহেদী ডিজাইন গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু ডিজাইন হলো।
১. গ্লিটার মেহেদি : গ্লিটার মেহেদি হচ্ছে মেহেদির সাথে গ্লিটার ব্যবহার করে ডিজাইন তৈরি করা। এটি দেখতে খুবই ঝলমলে এবং আকর্ষণীয় হয়। বিশেষ করে রাতের পার্টিতে বা উৎসবের জন্য এটি খুবই জনপ্রিয়।
২. সাদা মেহেদি : সাদা মেহেদি বা হোয়াইট হেনা হলো একটি নতুন এবং অনন্য ধরন, যা মেহেদি শিল্পে নতুনত্ব এনেছে। এটি সাধারনত পশ্চিমা দেশ গুলোতে বেশি জনপ্রিয়। বিবাহ এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে এটি ব্যবহৃত হয়।
৩. মাল্টিকালার মেহেদি : মেহেদি সাধারণত গাঢ় লাল বা কালো রঙের হয়, কিন্তু মাল্টিকালার মেহেদি ডিজাইনে বিভিন্ন রঙের মেহেদি পেস্ট ব্যবহার করা হয়। এটি দেখতে খুবই রঙিন এবং মজার হয়।
৪. ফিউশন ডিজাইন : ফিউশন ডিজাইন মূলত বিভিন্ন প্রকারের মেহেদী ডিজাইনের সংমিশ্রণ তৈরি করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতীয় এবং আরবিক ডিজাইন একসাথে মিশিয়ে নতুন ধরনের প্যাটার্ন তৈরি করা। এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং এর মধ্যে অনেক বৈচিত্র্য দেখা যায়।
![]() |
নতুন মেহেদি ডিজাইন |
![]() |
নতুন মেহেদি ডিজাইন |
![]() |
নতুন মেহেদি ডিজাইন |
![]() |
নতুন মেহেদি ডিজাইন |
মেহদী ডিজাইনের টেকনিক :
মেহেদি ডিজাইন তৈরি করতে বিভিন্ন টেকনিক ব্যবহার করা হয়, যা ডিজাইনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। কিছু সাধারণ টেকনিক হলো।
১. ফ্রি-হ্যান্ড টেকনিক : এটি সবচেয়ে প্রচলিত টেকনিক, যেখানে মেহেদি আল্পনাকারী নিজের কল্পনা অনুযায়ী ডিজাইন করে। এতে কোন টেমপ্লেট ব্যবহৃত হয় না।
২. টেমপ্লেট টেকনিক : টেমপ্লেট ব্যবহার করে ডিজাইন তৈরি করা এটি একটি সহজ পদ্ধতি, যা নতুনদের জন্য খুবই কার্যকর। এতে টেমপ্লেটের উপর মেহেদি পেস্ট লাগিয়ে ডিজাইন তৈরি করা হয়।
৩. কন টেকনিক : কন টেকনিক হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট আকারের কন ব্যবহার করে মেহেদী পেস্ট প্রয়োগ করা। এটি অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও পরিষ্কার ডিজাইন তৈরি করতে সাহায্য করে।
৪. ব্রাশ টেকনিক : ব্রাশ ব্যবহার করে মেহেদি ডিজাইন করা একটি নতুন এবং সৃজনশীল পদ্ধতি। এতে বিভিন্ন ধরণের ব্রাশ ব্যবহার করে মেহেদী পেস্ট লাগানো হয়।
মেহেদী ডিজাইনের যত্ন নেওয়া :
মেহেদি ডিজাইন করার পরে এর যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে ডিজাইন দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং রঙ গাঢ় হয়। কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো।
১. মেহেদী শুকানো : মেহেদি ডিজাইন করার পরে এটি সম্পূর্ণ শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। প্রায় ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা সময় লাগে পারে।
২. লেবু ও চিনি মিশ্রণ : মেহেদি শুকানোর পর লেবু ও চিনি মিশ্রণ ডিজাইনের উপর প্রয়োগ করলে রঙ গাঢ় হয়।
৩. তেল ব্যবহার : মেহেদি শুকানোর পরে তেল লাগালে ডিজাইন দীর্ঘস্থায়ী হয়। সরিষা তেল, নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪. জল এড়ানো : ডিজাইন করার পর ২৪ ঘণ্টা জল এড়িয়ে চলতে হবে, যাতে মেহেদির রঙ উঠে না যায়।
শেষ কথা :
মেহেদি ডিজাইন একটি সৃজনশীল ও শিল্পময় পদ্ধতি, যা মানুষের জীবনের বিভিন্ন আনন্দের মুহূর্তকে আরো রঙিন করে তোলে। এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত স্বকীয়তা প্রকাশ করা যায় এবং উৎসবের আনন্দ বহুগুণ বাড়িয়ে তোলা যায়। নতুন নতুন মেহেদি ডিজাইন ও টেকনিকের মাধ্যমে মেহেদি শিল্প প্রতিনিয়ত নতুন রূপে ও আঙ্গিকে উদ্ভাসিত হচ্ছে।